যুগ যুগান্ত ধরে জমে থাকা বিষাক্ত দীর্ঘশ্বাস। সূচিভেদ্য অমানিশা। এ মহারাত্রি যেন কালরাত্রি, কিন্তু সে মোহময় কালরাত্রি র গরল আমায় স্পর্শ করে না। এই অন্ধকারেই তো বেহুলা ভেসেছিল কলাপাতার ভেলা নিয়ে। তাই এ রাত্রি লখিন্দর এর মৃত্যুর রাত নয় , তার নবজন্মের শুভক্ষণ। এ মহানিশা শুধুই অপেক্ষার। সুরঙ্গশেষ এর অপেক্ষা।
মনে হয় , এ রাত্রি আর শেষ হবে না এই জন্মে ; ক্লান্ত, বড় ক্লান্ত সে প্রতীক্ষা। মহাকাল চোখের পাতা ফেলেন, কেটে যায় অনন্ত কাল।অন্ধকার যেন আরো ঘনীভূত হয় , আরো কালো হয় সেই রাত।
ভগবান সৃষ্টি কল্পের কাজ শেষ করেছেন সবে, ক্লান্ত , যোগনিদ্রায় বিশ্রাম রত । জাগিও না ওনাকে। অন্ধকারে অপেক্ষা কর, ধৈর্য ধর, জীবন এর সকল পুন্যক্ষণ এর পুর্বলগ্ন এমনি ক্লান্তিকর। এ তমসা ও তাই জ্যোতির্গর্ভা। ভগবান এখনো আলো সৃষ্টি করেননি , তাই বিশ্ব চরাচর এখনো চোখ মেলে তাকাতে শেখেনি ।পুণ্যতোয়া আলোর ধারা এখনো বাইরে আসেনি, অন্ধকারের মাতৃগর্ভে লালিত হচ্ছে।তাই চোখে দেখা যায় না, অনুভব করতে হয় ।চোখ বন্ধ করে অন্ধকার যখন আরো গভীর হয়, ধীরে ধীরে চেতনায় ধরা পরে তার অস্ত্বিত্ব ,আবেগে রোমকূপ শিহরিত হয়। তখন সৃষ্টি সুখের উল্লাস বইছে বিশ্বময়, কিন্তু ফল্গু ধারার মত অন্তরালে, তাই সব কিছু সমাহিত, অন্ধকার এ নিমজ্জিত। এ অন্ধকার সেই মাতৃ জঠর এর অন্ধকার, উষ্ণতায় মোড়া, আসন্ন প্রসবের অপেক্ষায় ধ্যান মগ্ন।
হিসেব নেই কিভাবে কখন কাটল এ অনন্ত রাত, হঠাত ই একদিন কিভাবে কার যেন বরে ভগীরথের তপস্যা সফল হলো ।ভগবান জেগে উঠলেন, নিবৃত্তি শেষে প্রবৃত্তির সময় এল আবার। তিনি এক এক করে জ্বেলে দিলেন সব বাতি গুলি নিজের হাতে, ঠিক দীপাবলী র রাত্রি র মত। যেন চক্ষু দান হল ব্রহ্মান্ডের।জ্বলে উঠলো এক এক করে নক্ষত্র পুঞ্জ, জন্ম নিলেন দেবতারা ; জন্ম নিল স্বর্গ - নরক, সুরাসুর ; জন্ম নিল আলোক - ভূলোক, পাপ - পুণ্য ; প্রজ্জ্বলিত হলো জীবনের প্রবাহ। সেদিন তিনি "আমি" থেকে "আমরা" হলেন ।
সেই থেকে প্রতি রাত আজ ও সাজে দীপাবলী র সাজে। আকাশ ভরা সূর্য তারা যেন মনে করিয়ে দিতে চায় প্রতি মুহুর্তে জীবন এর মন্ত্র - চরৈবেতি, চরৈবেতি।
ভাল লাগল দেবিশ্রী। চালিয়ে যাও।
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
Deletegood good ....
ReplyDeleteবাঃ !! বেশ লিখেছিস তো !! জীবনের অসাড়তা কোথায় ? এ তো আলোর উপাখ্যান ৷৷ তোর হবে ... :)
ReplyDeleteekoahang bohusyam!
ReplyDelete