Thursday, October 6, 2016

আবার এসেছে শরৎ, এই স্টার্কভিলেও। সূর্যের রঙে সোনা ধরেছে ,ঘাসের ওপর শিশির বিন্দু; আর সহস্র মাইল দূরে বসে আমায় ধরেছে অমোঘ পিছুটান। আবহসংগীতের মতো গ্রাস করেছে আগমনী।পুজো মানেই ঘুরে ফিরে আসলে এই হোম কামিং।ঊমা ফিরেছেন পিতৃগৃহে, সদ্য বিয়ে হওয়া মেয়েটি ও এই কদিন ফিরবে তাই মায়ের কাছে। প্রবাসীরা ফিরবে ঘরে। তাই দুর্গাপুজো নেহাত -ই একটা ঘরে ফেরার উজ্জাপন। মনের ভেতরের সেই শাশ্বত হরিহর কেবলই নিশ্চিন্দিপুরে ফিরে ফিরে যাচ্ছে।
 আমার পুজো আটকে আছে এখনো আমার স্মৃতির হরাইজন এ থাকা মেয়ে বেলায় কিংবা ক্লাস সিক্সের স্কার্ট পরা শিউলি তলায়, কিংবা সদ্য যৌবনের কলেজ পাড়ায়। এক একটা স্মৃতির এক একটা গন্ধ এখনো নাকে লেগে আছে। 
পুজো নিয়ে সব থেকে পুরোনো স্মৃতি যেটা মনে পরে সেটা ঠিক কোন বয়সের মনে নেই , কিন্তু দাদু - ঠাকুমা র মাঝে আমাদের পুরোনো বাড়ি তে শুয়ে ঘুমোনো।ভোরবেলা ৪টের সময় ঘুম দেখি ঘরে বাল্বের হলুদ আলো, একরাশ শিউলি আর জবা ফুল নিয়ে ঠাকুমা ঘরে ঢুকছেন। সেটা ছিল ওনার রোজকার পুজোর সময়। তখন নতুন জামায় যেন একটা গন্ধ ছিল, ছিট কাপড় এর গন্ধ। বাবা চিরকাল বলতেন নতুন জামা ধুয়ে পড়তে হয়।ধুয়ে কি না ধুয়ে জানি না তবে সকল বেলা স্নানের পর নতুন জামা পড়তে হয় আর তারপর দূর্গা ঠাকুর প্রণাম করতে যেতে হয়। কিন্তু গলি রাস্তায় অবশ্যম্ভাবী জল জমে থাকবে তখন- ও। পায়ের পাতা ডোবা জল মাড়িয়ে প্যান্ডেলে গিয়ে প্রথম দাঁড়ানো। জমে থাকা জল,প্যান্ডেল এর কাপড়,ব্লিচিং পাউডার এর সঙ্গে ধুপ ধুনোর গন্ধ। সব চেয়ে ছোটবেলার যে পুজোর সুর মনে আছে , না, মহালয়ার সুর নয়,শাহরুখ খান র দিওয়ানা সিনেমার " তেরা নাম লিখ দিয়া। .!" বলিউড জিন্দাবাদ!দিব্যা ভারতী খায় না মাথায় দেয় না বুঝলেও কিন্তু এই গানটা থেকে গেছে।এখনো এটা শুনলে মনে হয় সপ্তমী সকালে বাবার সঙ্গে রিক্সা করে যাচ্ছি। খুব একটা আনন্দ হচ্ছে,আর কোথাও থেকে মাইকে এই গানটা বাজছে।
শুভ শারদীয়া।দেশে,বিদেশে,মহাকাশে প্রত্যেক হৃদয়ে বোধন হোক শ্রী দূর্গার । 
#তব _অচিন্ত্য _রূপ _চরিত _মহিমা !

Wednesday, August 24, 2016

আবার এসেছে রাখী, চারিদিক ছেয়ে !


আমাদের ছোটবেলায় আমাদের মত সাধারন বাঙ্গালী ঘরে ভাইফোঁটা যেরকম হইহই করে পালন করা হত, সে তুলনায় রাখী বন্ধনের গুরুত্ব কম ছিল। তাছাড়া ঐ দিন ছুটিও থাকত না, ফলে ঐ দিন আমার তুতো ভাই বোনেদের সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ ও কম হত। তাই রাখী র দিনের স্মৃতিচারণ করতে বসলে অনেকের মতই আমার ও মনে আসে সেই লাল বারান্দা আর সবুজ দালান, সেই ৫নং নিবেদিতা লেনের স্কুল বাড়ি ; আমার ভাষায় যেটা second নয়, zeroth home 🙂

স্কুল বাসে উঠে থেকে রাখী পাওয়া শুরু , সারা দিন রাখী পরা ও পরানো, প্রিয় দিদি দের , বন্ধু দের। জনপ্রিয়তা কে বোধ হয় অন্তত ঐ দিন একটা physical quantity হিসাবে ধরা যায় , যাকে measure করা যাবে প্রাপ্ত রাখীর সংখ্যার সংগে সমানুপাতে ।

রাখীর সংগে traditional ভাই-বোন concept এর বাইরে এসে রাখী বন্ধন কে পারষ্পরিক ভালবাসা ও বন্ধনের প্রতীক হিসাবে ভাবতে শিখিয়েছিলেন রবি ঠাকুর সেই গত শতকে। স্কুলে দিদি দের কাছে পড়া সেই বঙ্গ ভঙ্গের হলুদ সুতোর রাখী কোথায় যেন এসে মিলে যেত আমাদের হাত ভর্তি রাখীর মধ্যে।


তাই রাখী আমার কাছে আজও শুধুমাত্র sexist একটা পার্বণ নয়,একটা প্রতীক - ভালোবাসা ,বিশ্বাস ও একতার, "রক্সা বন্ধন " এর ।