আবার এসেছে শরৎ, এই স্টার্কভিলেও। সূর্যের রঙে সোনা ধরেছে ,ঘাসের ওপর শিশির বিন্দু; আর সহস্র মাইল দূরে বসে আমায় ধরেছে অমোঘ পিছুটান। আবহসংগীতের মতো গ্রাস করেছে আগমনী।পুজো মানেই ঘুরে ফিরে আসলে এই হোম কামিং।ঊমা ফিরেছেন পিতৃগৃহে, সদ্য বিয়ে হওয়া মেয়েটি ও এই কদিন ফিরবে তাই মায়ের কাছে। প্রবাসীরা ফিরবে ঘরে। তাই দুর্গাপুজো নেহাত -ই একটা ঘরে ফেরার উজ্জাপন। মনের ভেতরের সেই শাশ্বত হরিহর কেবলই নিশ্চিন্দিপুরে ফিরে ফিরে যাচ্ছে।
আমার পুজো আটকে আছে এখনো আমার স্মৃতির হরাইজন এ থাকা মেয়ে বেলায় কিংবা ক্লাস সিক্সের স্কার্ট পরা শিউলি তলায়, কিংবা সদ্য যৌবনের কলেজ পাড়ায়। এক একটা স্মৃতির এক একটা গন্ধ এখনো নাকে লেগে আছে।
পুজো নিয়ে সব থেকে পুরোনো স্মৃতি যেটা মনে পরে সেটা ঠিক কোন বয়সের মনে নেই , কিন্তু দাদু - ঠাকুমা র মাঝে আমাদের পুরোনো বাড়ি তে শুয়ে ঘুমোনো।ভোরবেলা ৪টের সময় ঘুম দেখি ঘরে বাল্বের হলুদ আলো, একরাশ শিউলি আর জবা ফুল নিয়ে ঠাকুমা ঘরে ঢুকছেন। সেটা ছিল ওনার রোজকার পুজোর সময়। তখন নতুন জামায় যেন একটা গন্ধ ছিল, ছিট কাপড় এর গন্ধ। বাবা চিরকাল বলতেন নতুন জামা ধুয়ে পড়তে হয়।ধুয়ে কি না ধুয়ে জানি না তবে সকল বেলা স্নানের পর নতুন জামা পড়তে হয় আর তারপর দূর্গা ঠাকুর প্রণাম করতে যেতে হয়। কিন্তু গলি রাস্তায় অবশ্যম্ভাবী জল জমে থাকবে তখন- ও। পায়ের পাতা ডোবা জল মাড়িয়ে প্যান্ডেলে গিয়ে প্রথম দাঁড়ানো। জমে থাকা জল,প্যান্ডেল এর কাপড়,ব্লিচিং পাউডার এর সঙ্গে ধুপ ধুনোর গন্ধ। সব চেয়ে ছোটবেলার যে পুজোর সুর মনে আছে , না, মহালয়ার সুর নয়,শাহরুখ খান র দিওয়ানা সিনেমার " তেরা নাম লিখ দিয়া। .!" বলিউড জিন্দাবাদ!দিব্যা ভারতী খায় না মাথায় দেয় না বুঝলেও কিন্তু এই গানটা থেকে গেছে।এখনো এটা শুনলে মনে হয় সপ্তমী সকালে বাবার সঙ্গে রিক্সা করে যাচ্ছি। খুব একটা আনন্দ হচ্ছে,আর কোথাও থেকে মাইকে এই গানটা বাজছে।
শুভ শারদীয়া।দেশে,বিদেশে,মহাকাশে প্রত্যেক হৃদয়ে বোধন হোক শ্রী দূর্গার ।
#তব _অচিন্ত্য _রূপ _চরিত _মহিমা !
No comments:
Post a Comment